পাহাড়ি খাবার

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জুম্ম জনগোষ্ঠী পাহাড়িদের খাবারে রয়েছে বৈচিত্র্যতা যা তাদের সমতলের অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর লোকেদের থেকে নিঃসন্দেহে করেছে আলাদা। পাহাড়িদের বৈচিত্র্যময় সুস্বাদু খাবারের স্বাদ পেতে চায় অপরাপর জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা। কিন্তু তারা জানে না কিভাবে পাহাড়িদের খাবার তৈরি করতে হয়। তাদের জন্যই এই ব্লগ। ব্লগে পড়ুন আর ঘরে বসে পাহাড়ি খাবার তৈরি করুন।

বাঁশের চোঙায় রান্না - অপূর্ব স্বাদের পাহাড়ি খাবার

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাঁশের চোঙায় ঢুকিয়ে বিভিন্ন ধরণের খাবার রান্না করার প্রবণতাটা বেশি। গতানুগতিক হাড়ি-পাতিলে রান্না খাবারের স্বাদ আর বাঁশের চোঙায় রান্না খাবারের স্বাদ এক নয়। তাই ব্যতিক্রমধর্মী ও ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক খাবার তৈরি করতে আপনিও পাহাড়িদের মত বাঁশের চোঙায় রান্না করে চমকে দিতে পারেন পরিবারের সদস্যদের।

বাঁশের চোঙায় এই রান্নাকে চাকমা ভাষায় বলা হয় “চুমো গোরাং”। যেকোনো ধরণের চোঙাকে চাকমারা চুমো বলে থাকে।
চুমো গোরাং
বাঁশের চোঙায় রান্না
ছবি: সংগৃহীত

কি কি রান্না করতে পারবেন বাঁশের চোঙায়?

পাহাড়িরা বাঁশের চোঙায় সাধারণত মাছ-মাংস রান্না করে থাকে। তবে সবধরণের মাংস এতে রান্না করা যায় এবং মাছের মধ্যে ছোট ছোট মাছগুলোই বেশি রান্না করা হয়। কেউ কেউ ভিন্ন স্বাদ পেতে বিন্নি চাউলও রান্না করে থাকেন বাঁশের চোঙায়।

যেভাবে করবেন বাঁশের চোঙায় রান্না:

প্রথমে তাজা ও কাঁচা বাঁশের একদিকে গিরা ও একদিকে খোলা এরকম লম্বা বা মাঝারি দৈর্ঘ্যের কয়েকটি চোঙা সংগ্রহ করে নিন। এই ধরণের বাঁশে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় সহজে আগুনে পুড়ে যায় না এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আগুনে রাখা যায়।

চোঙাগুলোর ভেতরটা ভালো করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। সম্ভব হলে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর মাংসগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিন। মাংসের সাথে প্রয়োজনমত রসুন, পেঁয়াজ, আদা বাটা, কাঁচা মরিচ বাঁটা, ধনিয়া পাতার কুঁচি, হলুদ ও লবণ মিশিয়ে নিন। ভালো করে মিশ্রণ তৈরি করুন।

আরও পড়ুন - “বাঁশ কোড়ল” সুস্বাদু পাহাড়ি খাবার। রান্না করবেন কিভাবে?

এবার মিশ্রণ এক এক করে চোঙায় ঢুকিয়ে দিন। আধা কাপ করে পরিষ্কার পানি চোঙাগুলোতে ঢুকিয়ে কলা পাতা দিয়ে চোঙার মুখগুলো বন্ধ করে দিন। এরপর চোঙাগুলো সরাসরি আগুনে না পুড়িয়ে কয়লার চুলায় লম্বালম্বি বসিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পরপর চোঙাগুলো ঘুরিয়ে দিন যাতে সবদিক আগুনের উত্তাপ পায়।

নির্দিষ্ট সময় পর চোঙাগুলোর মুখ দিয়ে বাষ্প বেরিয়ে আসবে। আরো ৮-১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর চোঙাগুলো  নামিয়ে নিন। বেশ হয়ে গেলো বাঁশের চোঙায় দারুণ পাহাড়ি রান্না।

উল্লেখ্য, এভাবে রান্না করা মুরগীর মাংসকে বলা হয় “ব্যাম্বো চিকেন”।


আরও পড়ুন - চাকমা বড়া পিঠা রেসিপি

No comments:

Post a Comment

লেখা পাঠান

Name

Email *

Message *