উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সিদল |
নাপ্পি বা সিদল শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের প্রিয় খাবার নয়। এটি উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছেও বেশ জনপ্রিয় এক খাবার। মুখরোচক এই খাবারটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের কাছে ‘সিদল’ নামেই বেশি পরিচিত। রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলায় গ্রামবাংলার মুখরোচক খাবার হিসেবে সিদলের কদর রয়েছে যথেষ্ট। পারিবারিক অনুষ্ঠান কিংবা অতিথি আপ্যায়নে সিদলের তৈরি খাবার পরিবেশন করা হয়। আজ জানবো, মুখরোচক খাবার ‘সিদল’ তৈরির পদ্ধতি।
আরও পড়ুন: নাপ্পি বা সিদল যেভাবে তৈরি করা হয়
যা যা লাগে
১) পুঁটি বা ছোট জাতের মাছের শুঁটকি২) কচুর ডাটা
৩) কাঠের হামান দিস্তা বা শিল-পাটা
৪) হলুদ গুঁড়া
৫) মরিচ গুঁড়া
৬) লবণ
৭) আদা বাটা
৮) রসুন বাটা
৯) পেঁয়াজ বাটা
১০) সয়াবিন বা সরিষার তেল
যেভাবে তৈরি করবেন
প্রথম শুটকিগুলো ভালোমতো ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে যাতে মচমচে হয়। এরপর মচমচে শুটকিগুলো কাঠের হামান দিস্তা বা শিল-পাটা বা ঢেঁকিতে গুঁড়া করে নিতে হবে। এরপর চালুনিতে চেকে চেকে শুটকির মিহি গুঁড়া সংগ্রহ করে নিতে হবে। এর ফাঁকে সাদা মানকচু বা কালো কচুর ডাটা ধুয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ রোদে রেখে পানি ঝড়িয়ে নিতে হবে। তারপর কচুর ডাটাগুলোও হামান দিস্তা বা ঢেঁকিতে পিষে মিহি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।রোদে শুকানো হচ্ছে চ্যাপ্টাকৃতির সিদল |
এবার কচু ডাটার পেস্ট ও শুটকির গুঁড়ার সাথে পরিমাণমতো লবণ, হলুদ, মরিচ গুঁড়া, আদা বাটা, রসুন বাটা ও পেঁয়াজ বাটা ভালোমতো মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করে নিতে হবে। এরপর মণ্ডে সরিষার তেল মখে হাতের তালু দিয়ে গোল গোল বা চ্যাপ্টা আকৃতির সিদল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিতে হবে। রোদে শুকানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে সিদলের উপরিভাগ ফেটে না যায়। এভাবে রোদে শুকানোর পর শক্ত হয়ে এলে সিদল সংরক্ষণের উপযোগী হয়।
যেভাবে সিদল সংরক্ষণ করবেন
রোদে শুকানো সিদল ঠান্ডা হয়ে এলে প্লাস্টিক, টিন বা কাঁচের মুখবন্ধ পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে, মাঝে মাঝে আবার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এভাবে দেড় থেকে দুই বছর সিদল সংরক্ষণ করা যায়।
আবার, প্লাস্টিকের কাগজে মুড়িয়ে রেফ্রিজারেটরে রেখেও ৩ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এক্ষেত্রেও মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
No comments:
Post a Comment